ব্যাটারি আবিস্কার পাল্টিয়ে দিয়েছিল পৃথিবীকে
© Mehrab360
© Mehrab360
বিজ্ঞান জগতের অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব আলেসান্ড্রো ভোল্টা। ১৮০০ সালে তিনি সর্বপ্রথম ব্যাটারি আবিষ্কার করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে এক বিপ্লব ঘটান। তাঁর উদ্ভাবন আধুনিক বৈদ্যুতিক প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করে এবং আমাদের জীবনে বৈদ্যুতিক শক্তির প্রয়োগ সহজ করে তোলে। তবে, ১৯৩৮ সালের একটি খোঁজ এই ইতিহাস সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে চলেছিল।
১৯৩৮ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের কাছাকাছি খুজুত রাবুয়া নামক স্থানে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ উইলহেম কনিগ প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ চালাচ্ছিলেন। সেখানে তিনি আবিষ্কার করেন একটি কাদামাটির পাত্র, যার ভেতরে লোহার একটি দন্ড ছিল। প্রথমে এ পাত্রে তেমন আগ্রহ না পেয়ে তাতে সময় দেয়া ছেড়ে দেন তিনি। কিছুদিন পর তাঁর চোখে পড়ে পাত্রের ভেতরের কিছু অংশ ক্ষয়ে গেছে যা দেখতে অনেকটা এসিড, ফলে উৎপন্ন ক্ষয়ের অনুরূপ।
তাঁর মনে পড়ে ১৩৮ বছর আগে, ইতালীয় বিজ্ঞানী আলেসান্ড্রো ভোল্টা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার জন্য তামার পাত এবং এসিড দ্রবণ ব্যবহার করেছিলেন। এটি দেখে কনিগের মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে কি এই কাদামাটির পাত্রটি একটি প্রাচীন ব্যাটারি হতে পারে? কনিগ দেখতে পান উভয়ের মাঝে যথেষ্ট মিল আছে। তিনি নিশ্চিত হয়ে পড়েন এটাই পৃথিবীর প্রথম ব্যাটারি। তিনি সবাইকে জানান তাঁর খোঁজের কথা। আর শুরু হয় এর সত্যতা নিয়ে যুক্তি তর্কের লড়াই।
এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি একটি প্রায় ১৪০ মিমি (৬ ইঞ্চি) উচ্চতার টেরাকোটা পাত্র, যার মুখ ৩৮ মিমি (১.৫ ইঞ্চি) প্রশস্ত। পাত্রের ভিতরে একটি তামার সিলিন্ডার রয়েছে, যা একটি লোহার দণ্ড ধারণ করে। লোহার দণ্ডটি বিটুমিন দিয়ে। তামা থেকে আলাদা করা হয়েছে। পাত্রটি সম্পূর্ণ জলরোধী নয়, ফলে এতে তরল ভর্তি করা হলে লোহার দণ্ডটি সেই তরলে নিমজ্জিত হবে।
প্রত্নতাত্ত্ববিদ উইলহেম কনিগের মতে, এই নিদর্শনগুলো পার্থিয়ান যুগের (২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২৪ খ্রিস্টাব্দ) হতে পারে। তবে, ব্রিটিশ মিউজিয়ামের সেন্ট জন সিম্পসনের মতে, এর খনন এবং প্রেক্ষাপট সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি এবং তারিখের ব্যাপারে প্রমাণ খুবই দুর্বল। তাছাড়া কনিগ পাত্রটি খনন করেছিলেন নাকি জাদুঘরের কোনো সংগ্রহের মাঝে খুঁজে পেয়েছেন তা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
{fullWidth}
ক্যাটাগরি
বিজ্ঞান