বাংলাদেশের বিলুপ্ত প্রায় কয়েকটি প্রাণী
© Mehrab360
বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় কয়েকটি প্রাণী মধ্যে অন্যতম
{fullWidth}
© Mehrab360
• প্রাণী বৈচিত্র্য
১. রাজশকুন (Red-headed vulture)
রাজশকুন বিশ্ব প্রেক্ষাপটেই একটি বিপন্ন পাখি, বাংলাদেশের এটি মহা বিপন্ন বলে চিহ্নিত। এটি বাংলাদেশের প্রাক্তন আবাসিক পাখি, তবে বর্তমানে আর দেখা যায় না। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বিস্তৃতি।
রাজশকুনের বৈজ্ঞানিক নাম Sarcogyps calvus. এর মাথা লাল পালক কালো। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির চেহারা অভিন্ন। অন্যান্য শকুনের মতো এরা দলবদ্ধ নয়, একা বা জড়ো হয়ে দেখা যায়। খাবারের তালিকা মৃত পশুর দেহ। উঁচু গাছের ডালে পাতা দিয়ে বাসা বানায় এবং একটি মাত্র ডিম পাড়ে। ৪৫ দিনে ডিম ফোটে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এটি সংরক্ষিত প্রজাতি।
২. ঘড়িয়াল (True gavial)
ঘড়িয়াল বাংলাদেশের একটি অতি বিপদাপন্ন সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। ধরে নেওয়া হয় বাংলাদেশের এটি প্রায় বিলুপ্ত, যদিও ভারতের উজান থেকে আসা ঘরিয়াল কদাচিৎ নদীতে দেখা যায়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gavialis gangeticus ঘড়িয়াল পুরুষ ও স্ত্রী আলাদা ধরনের হয়। পুরুষ ঘড়িয়ালে দৈর্ঘ্য ৬.৫ মি. ও স্ত্রী ঘড়িয়ালের দৈর্ঘ্য ৪.৫ মিটার। ঘড়িয়াল গভীর ও দ্রুত প্রবাহমান পানিতে বাস করে। এদের প্রধান খাদ্য মাছ, নভেম্বর জানুয়ারি এদের প্রজনন মাস। স্ত্রী ঘড়িয়াল বালুতে তৈরি গর্তে ৩০-৫০ টি ডিম পাড়ে। ডিম অনেক বড়। ৩ মাস তা দেয়ার পর ডিম থেকে বাচ্চা হয়।
এদেরকে ব্রহ্মপুত্র নদ, সিন্ধু নদ, গঙ্গা নদী এবং মহানদীতে পাওয়া যায়। মায়ানমার ও পাকিস্তানেও এ প্রজাতির প্রায় বিলুপ্ত। সাধারণত ছেলেদের মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে। এবং এটি বিলুপ্তির একটি বড় কারণ। এ ব্যাপারে অবশ্যই জেলেদের মাঝে সচেতনতার সৃষ্টি করতে হবে।
৩. মিঠা পানির কুমির (Freshwater crocodyle)
মিঠাপানির কুমির বাংলাদেশে বিলুপ্ত, প্রাকৃতিক ভাবে আর দেখা যায় না। বাগেরহাটের খান জাহান আলী (র.) মাজারের সাথে পুকুরে কয়েকটি কুমির আছে। সম্প্রীতি ভারত থেকে সাফারি পার্কে পালনের জন্য কয়েকটি কুমির আনা হয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Crocodylus palustris. প্রাপ্তবয়স্ক কুমিরের দৈর্ঘ্য তিন থেকে পাঁচ মিটার। এরা নদী, পুকুর ইত্যাদি মিঠা পানিতে বাস করে, সাধারণত জোয়ার ভাটা এলাকায় প্রবেশ করে না। এরা দলবদ্ধভাবে বাস করে। এরা নদীর তীরে গর্তে ডিম পাড়ে ৫০-৫৫ দিনে ডিম ফোটে। যে কয়টি মিঠা পানির কুমির এখন বাংলাদেশে আছে তা সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
৪. নীলগাই (Nilgai)
নীলগাই বাংলাদেশী আরেকটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। ১৯৪০ সালের দিকে বর্তমানে বাংলাদেশের তেতুলিয়া অঞ্চলে নীলগাই দেখতে পাওয়া যেত। বাংলাদেশে এখন এরা বিলুপ্ত। এরা সমতল ভূমিতে বাস করে। মিল গাই এর বৈজ্ঞানিক নাম Boselaphus tragocamelis. প্রজনন সময় ছাড়া সাধারণত বছরে অন্যান্য সময় ষাঁড় লোম নীল-ধূসর। ৪ সেপ্টেম্বর (২০১৮) ঠাকুরগাঁও এর রানীশংকৈল থেকে স্থানীয়রা একটি গর্ভবতী নীলগাই উদ্ধার করেন। বন বিভাগ থেকে সেই নীলগাইটি রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে এসেছে। আঘাতপ্রাপ্ত থাকার কারণে গর্ভপাতের পর বাচ্চাটি মারা যায় তবে মা নীলগাইটিকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।
৫. শুশুক (River dolphin)
শুশুক একটি স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী। বাংলাদেশের শুশুক এখন বিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। সাধারণত এরা উপকূল ও সমুদ্রে বিচরণ করে। বর্ষায় বড় বড় নদী দিয়ে অনেক ভেতরে চলে আসে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Orcaella brevirostris. এর পিঠে পাকনা নেই। এরা মাঝে মাঝে পানি থেকে উপরে লাফ দেয় এবং দল বেঁধে চলে, মাছ এদের প্রধান খাদ্য।
ছবিঃ সংগৃহীত
ক্যাটাগরি
বিজ্ঞান