হৃদরোগ হওয়ার পূর্বাভাস দিবে এআই প্রযুক্তি!
{getToc} $title={বিষয়বস্তু সারণি} $count={Boolean} $expanded={Boolean}
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি হৃদরোগের পূর্বাভাসে বিপ্লব ঘটাচ্ছে
হৃদরোগ বর্তমান বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ১৭.৯ মিলিয়ন মানুষ হৃদরোগে মারা যায়। এটি প্রমাণ করে যে, হৃদরোগ প্রতিরোধ ও সময়মতো চিকিৎসা শুরু করার প্রয়োজনীয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি এক অনন্য সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
![]() |
এআই দিয়ে নির্মিত |
AI মূলত মানুষের বিভিন্ন স্বাস্থ্য ডেটা বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করে। এটি রোগীর ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG), সিটি স্ক্যান, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল লেভেল এবং এমনকি রেটিনা স্ক্যানের মতো ডেটা ব্যবহার করে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, AI প্রযুক্তি হৃদরোগের ঝুঁকি উপসর্গ দেখা দেওয়ার অনেক আগেই শনাক্ত করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমন একটি AI টুল তৈরি করেছেন যা দশ বছর আগেই হৃদরোগের সম্ভাবনা চিহ্নিত করতে পারে। এই প্রযুক্তি হৃদযন্ত্রের গঠন ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে যেসব জায়গায় ব্লক বা ক্ষতি হতে পারে তা পূর্বাভাস দেয়।
AI কীভাবে কাজ করে?
হৃদরোগ শনাক্তে AI টুলগুলি ডিপ লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে। এটি ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে রোগীর হৃদযন্ত্রের অবস্থা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়।
AI স্বয়ংক্রিয়ভাবে ECG ডেটা স্ক্যান করে অনিয়মিত হার্টবিট বা অস্বাভাবিকতাগুলি চিহ্নিত করে। রেটিনার ব্লাড ভেসেলের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ নির্ধারণ করে ।হৃদযন্ত্রের চারপাশে সৃষ্ট ব্লকের উপস্থিতি নির্ধারণ করে।
বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, AI প্রযুক্তি প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত টুল হৃদরোগের ঝুঁকি নির্ণয়ে ৯০ শতাংশ সঠিক ফলাফল দিয়েছে।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে। AI পরিচালিত স্ক্যানিং পদ্ধতি রোগীদের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করছে। এর ফলে চিকিৎসকরা আরও নির্ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারছেন।
বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এ অবস্থায় AI প্রযুক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ঢাকার কিছু আধুনিক হাসপাতাল ইতোমধ্যেই AI-ভিত্তিক ডায়াগনস্টিক টুল ব্যবহার শুরু করেছে। এগুলি চিকিৎসকদের দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করছে।
AI প্রযুক্তি হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে, এর সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং ডেটার সুরক্ষা রক্ষা করা জরুরি। এছাড়াও, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য করতে হলে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি হৃদরোগের ঝুঁকি নির্ধারণ ও প্রতিরোধে একটি বিপ্লবী পরিবর্তন এনেছে। উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই রোগ নির্ণয়ের ক্ষমতা মানবজীবনে নতুন আশা যোগ করছে। এই প্রযুক্তি আরও সহজলভ্য ও কার্যকর হলে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে।
{fullWidth}