বঙ্গাব্দ
© Mehrab360

মৌলিক বল আসলেই কি একীভূত করা যাবে?

© Mehrab360
নিউটন যখন বিশ্বজনীন মহাকর্ষ বলের সূত্র আবিষ্কার করেন তখন তিনি মহাবিশ্বে‌ অবস্থিত বস্তু গুলোর মধ্যকার বল সমূহ কে অর্থাৎ খ-গোলীয় বল সমূহকে পৃথিবীতে অনুভূত মহাকর্ষ বলের সাথে একীভূত করেন। উনবিংশ শতাব্দী নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা বিভিন্ন তড়িৎ চৌম্বক ঘটনাকে একীভূত করে যা পরবর্তীকালে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েলের উদ্ভাবিত তাড়িতচুম্বকত্ব তত্ত্বের মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।


এআই দিয়ে নির্মিত


১৯৬১ সালে শেলডন গ্ল্যাশো সর্বপ্রথম তড়িৎচুম্বক বল ও দুর্বল নিউক্লিয় বলের মধ্যে একটা মিল খুঁজে পান এবং বলদ্বয়ের একীভবনের এক তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন। অবশ্য সে তথ্য ছিল অসম্পূর্ণ। ১৯৬৭ সালে প্রফেসর আব্দুস সালাম এবং স্টিফেন ওয়াইনবার্গ পৃথক পৃথকভাবে গ্ল্যাশো তত্ত্বের পূর্ণতা দান করেন যা তাড়িত-দুর্বল মিথস্ক্রিয়া নামে পরিচিত লাভ করে।


এই তত্ত্বের তড়িৎচৌম্বক বল ও দুর্বল নিউক্লিয় বলকে একীভূত করা সম্ভব হয়। ১৯৭৩ সালে একদল বিজ্ঞানী প্রথম পর্যায়ে তাড়িত-দুর্বল সংক্রান্ত গ্ল্যাশো-সালাম-ওয়াইনবার্গ তত্ত্বের পরীক্ষামূলক প্রমাণের সক্ষম হন। ১৯৭৯ সালে গ্ল্যাশো, সালাম ও ওয়াইনবার্গকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। কার্লো রুবিয়া ও সাইমন ভ্যান ডার মীর এর নেতৃত্বে প্রায় একশত পদার্থবিজ্ঞানীর একটি দল সার্ন এর গবেষণাগারে তাড়িত-দুর্বল বলের বাহক কণা W এবং Z গেজ বোসন আবিষ্কারের সমর্থ হওয়ায় তাড়িত-চুম্বক বল ও দুর্বল নিউক্লিয় বল একীভবনের তাড়িত-দুর্বল তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।


সকল নিউক্লিয় বলের সাথে তাড়িত-দুর্বল বলের একীভূত করা। এই উদ্যোগকে মহামিলন তত্ত্ব বলা হয়। এই লক্ষ্যে বিশ্বে কণা পদার্থবিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তাত্ত্বিকভাবে মহামিলন তত্ত্ব তাড়িত-দুর্বল বল ও সবল নিউক্লীয় বলকে মেলাতে সক্ষম হলেও মহাকর্ষ বল এর আওতার বাইরে রয়ে গেছে এবং বিজ্ঞানীদের হাতে এ তত্ত্বের কোন পরীক্ষামূলক প্রমাণ এখনো আসেনি। সম্প্রীতি বিজ্ঞানীরা নিউট্রিনোর ভর আবিষ্কার করেছে। এই আবিষ্কার মহামিলন তত্ত্বকে আরও এগিয়ে নেবে নাকি সবকিছু আবার নতুন করে ভাবতে হবে সেটা দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্রঃ উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান

{fullWidth}
© Mehrab360