বঙ্গাব্দ
© Mehrab360

কম্পাস কাঁটা মহাকাশে কোন দিকে ঘুরে থাকবে

© Mehrab360
এআই দিয়ে নির্মিত


প্রাচীন যুগ থেকে মানুষ পৃথিবীতে দিক নির্ণয়ের জন্য কম্পাস ব্যবহার করে আসছে। কম্পাসের কাঁটা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে কাজ করে উত্তর এবং দক্ষিণ দিক নির্দেশ করে। তবে, যখন আমরা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরের মহাকাশে যাই, তখন কি হবে? মহাকাশে চৌম্বক ক্ষেত্র নেই বা পৃথিবীর মতো স্পষ্টভাবে কাজ করে না। তাহলে, মহাকাশে কম্পাসের কাঁটা কোন দিকে ঘুরে থাকবে?


কম্পাসের কাঁটা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর কোরে উপস্থিত গলিত লোহা এবং নিকেলের গতিশীলতার কারণে সৃষ্টি হয়। কম্পাসের চৌম্বক কাঁটা সর্বদা পৃথিবীর চৌম্বক উত্তর দিকে নির্দেশ করে। এটি আমাদের দিক নির্ণয়ে সহায়তা করে।


মহাকাশে চৌম্বক ক্ষেত্র

মহাকাশে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র কার্যত শূন্য হয়ে যায়। তবে, পৃথিবীর কাছাকাছি অঞ্চলে চৌম্বক ক্ষেত্র কিছুটা পাওয়া যেতে পারে। মহাকাশে বিভিন্ন গ্রহ, নক্ষত্র এবং মহাজাগতিক ঘটনার কারণে ছোট ছোট চৌম্বক ক্ষেত্র থাকে, তবে সেগুলো পৃথিবীর মতো শক্তিশালী নয়। সুতরাং, মহাকাশে যখন কম্পাস নিয়ে যাওয়া হবে, তখন এটি কার্যত অচল হয়ে যাবে।


মহাকাশে কম্পাসের কার্যকারিতা

১. চৌম্বক ক্ষেত্রের অভাবঃ মহাকাশে শক্তিশালী কোনো চৌম্বক ক্ষেত্র না থাকায় কম্পাসের কাঁটা নির্দিষ্ট কোনো দিকে স্থির থাকবে না। এটি হয়তো এলোমেলোভাবে ঘুরে থাকতে পারে বা একদম স্থির থাকবে।

২. ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক প্রভাবঃ মহাকাশে কিছু বিশেষ জায়গায়, যেমন সূর্যের কাছাকাছি গেলে, শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্ষেত্র পাওয়া যায়। এই ক্ষেত্র কম্পাসের কাঁটার গতিবিধি প্রভাবিত করতে পারে।

৩. গুরুত্বহীনতাঃ (Microgravity) মহাকাশে কম্পাস ভাসমান অবস্থায় থাকবে। এর কারণে এটি চৌম্বক ক্ষেত্রের অভাব ছাড়াও মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থেকে মুক্ত থাকবে, ফলে এটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে না।


কম্পাসের বিকল্প

মহাকাশ ভ্রমণে কম্পাসের চেয়ে আরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ঃ

জাইরোস্কোপঃ এটি মহাকাশযানের অবস্থান নির্ধারণে ব্যবহৃত হয় এবং এটি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল নয়।

স্টার ট্র্যাকারঃ মহাকাশযানে লাগানো এই যন্ত্রটি নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয় করে দিক নির্ধারণে সাহায্য করে।

GPS ও অন্যান্য সিগন্যালঃ পৃথিবীর কাছাকাছি মহাকাশ অঞ্চলে GPS সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।


মহাকাশে কম্পাস কার্যত অকার্যকর। এটি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল, যা মহাকাশে অনুপস্থিত। মহাকাশ অভিযানে জাইরোস্কোপ, স্টার ট্র্যাকার, এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। মহাকাশে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভাব একটি চমকপ্রদ বাস্তবতা, যা আমাদের পৃথিবীর বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে আরও জানার সুযোগ দেয়।


{fullWidth}
© Mehrab360