বঙ্গাব্দ
© Mehrab360

অধিক উপগ্রহ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে হুমকিতে ফেলছে!

© Mehrab360

স্যাটেলাইট গুলো স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার দূষিত করছে এই বিষয়টি বর্তমান সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে। স্যাটেলাইট গুলো মূলত মহাকাশে পাঠানো হয় যোগাযোগ, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, নেভিগেশন এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য। তবে, এই স্যাটেলাইট গুলোর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তাদের মিশন শেষ হওয়ার পর তাদের ধ্বংসাবশেষ বা স্পেস ডেব্রিস হিসেবে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জমা হওয়ার কারণে পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ থেকে ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এই স্তরটি ওজোন স্তর ধারণ করে, যা সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের রক্ষা করে। স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষ এবং রাসায়নিক পদার্থ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে মিশে এর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।

স্যাটেলাইট গুলো যখন তাদের মিশন শেষ করে বা বিকল হয়ে যায়, তখন সেগুলি মহাকাশে ভাসতে থাকে। সময়ের সাথে সাথে এই স্যাটেলাইট গুলো ভেঙে ছোট ছোট টুকরো হয়ে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে প্রবেশ করে। এই ধ্বংসাবশেষ গুলো স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জমা হয়ে বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক গঠন পরিবর্তন করে। বিশেষ করে, স্যাটেলাইট গুলোতে ব্যবহৃত ধাতু এবং রাসায়নিক পদার্থ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে মিশে ওজোন স্তরের ক্ষতি করতে পারে। ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে প্রবেশ করে, যা মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে।

এছাড়াও, স্যাটেলাইট গুলো থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে মেঘ গঠনের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। এই মেঘ জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে এবং বিশ্ব উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে। স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষগুলি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যায়, যা পরিবেশগত সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। স্যাটেলাইট গুলোর ডিজাইন উন্নত করা, তাদের মিশন শেষ হওয়ার পর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে প্রবেশ না করার ব্যবস্থা করা এবং স্পেস ডেব্রিস পরিষ্কার করার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হচ্ছে। তবে, এই সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কঠোর নিয়মকানুন প্রয়োজন।
{fullWidth}
© Mehrab360